চাকরি প্রার্থীদের নিকট সবচেয়ে মূল্যবান পত্র গুলোর মধ্যে একটি হলো নিয়োগ পত্র বা Appointment Letter। চাকরির নিয়োগ পত্র মূলত একটি অফিসিয়াল চিঠি। যাটি নিয়োগকর্তা কর্তৃক নিয়োগ প্রর্থীরগণের প্রেরন করা হয়। যেহেতু এটি একটি অফিসিয়াল বা আনুষ্ঠানিক পত্র সেহেতু এটি লেখার নিয়মও প্রায় অন্যন্য অফিসিয়াল চিঠি মতই। তবুও এই আলোচনায় আমরা নিয়োগ পত্র কি, নিয়োগ পত্র লেখার নিয়ম সহ প্রাসঙ্গিক বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
নিয়োগ পত্র কি :
নিয়োগ পত্র যার অন্য নাম হচ্ছে Appointment Letter। নিয়োগ পত্র মূলত নিয়োগকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পত্র। যা নিয়োগ প্রার্থীর নিকট প্রেরন করা হয়। যখন কোন নিয়োগ প্রার্থী কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করে তখন নিয়োগ কর্তা উক্ত প্রার্থী যোগ্য কিনা সেটি যাচাই বাচাই করার জন্য নিয়োগ পরীক্ষা এবং সাক্ষাতকার অথবা সরাসরি সাক্ষাতকার গ্রহণ করে থাকে। সাক্ষাতকারে উক্ত প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, নিয়োগ পরীক্ষার মার্ক ইত্যাদি মূল্যায়ন করে যদি যোগ্য মনে হয় তখন পরবর্তীতে উক্ত প্রার্থীকে চাকরিতে যোগদানের জন্য একটি পত্র প্রেরন করা হয়। সেটাকেই মূলত নিয়োগ পত্র বলে।
উল্লেখ্য আপনি যদি এখনো পেশাদার চাকরির আবেদন পত্র লিখতে না জানেন তাহলে আমাদের এই পোষ্টটি দেখতে পারেন।
নিয়োগ পত্র লেখার নিয়ম :
- তারিখ : চাকরির নিয়োগ পত্র সাধারণত প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল প্যাডে লেখা হয়। সেকারনে নিয়োগ প্যাডে যদি নির্দিষ্ট করে তারিখ লেখার জায়গা থাকে তাহলে নতুন করে নিয়োগ পত্রে তারিখ লেখার প্রয়োজন নেই। তবে যদি নিয়োগ পত্রটি প্যাডে না লিখে অথবা প্যাডে তারিখের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা না থাকে তাহলে প্রথমে তারিখ লিখে নিয়োগ পত্র লেখা শুরু করতে হবে।
- প্রেরকের পদবী ও ঠিকানা : বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক পত্র গুলোতে সাধারণত আলাদা করে প্রেরকের ঠিকানা লেখা হয় না। তাই এই অংশটি আপনার উপর নির্ভর করবে। যদি দিতে চান তাহলে তারিখের পরেই প্রাপকের পদবী এবং প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
- প্রাপকের নাম ও ঠিকানা : নিয়োগ পত্রে আবশ্যই প্রাককের নাম এবং পূর্ন ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি প্রাপক লিখে তার নিচ থেকে প্রাপকের নাম ও ঠিকানা লিখবেন। অথবা কোন কিছু না লিখে সরাসরিও প্রাপকের নাম ও ঠিকানা লিখতে পারেন। আপনি চাইলে এই অংশটি মূল পত্রের মধ্যেও সংযুক্ত করতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে জনাব লিখার পর প্রাপকের নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
- বিষয় : নিয়োগ পত্রে বিষয় থাকাটা গুরুত্বপূর্ন। বিষয়ের জায়গায় লিখবে ” নিয়োগ পত্র”।
- অভিবাদন : আনুষ্ঠানিক পত্রের বাধ্যতামূলক অংশ হচ্ছে অভিবাদন। এই ক্ষেত্রে আপনি জনাব, মহোদয়ের যে কোন একটি অভিবাদন হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।
- মূল পত্র : এই অংশে প্রাপকে নিয়োগের বিষয়টি যথাসম্ভব স্পষ্ট করে উল্লেখ করবেন। এই অংশটি এভাবেও লিখতে পারেন “কর্তৃপক্ষ আপনাকে এই মর্মে জানাচ্ছে, আপনার গত —————ইং তারিখের আবেদন পত্র এবং আবেদন পরবর্তী নিয়োগ পরীক্ষা এবং স্বাক্ষাতকার অথবা সরাসরি কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে নিম্নলিখিত শর্তসাপেক্ষে অত্র প্রতিষ্ঠানে —————–পদে ————গ্রেডে নিয়োগ প্রাদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আপনার পরিচিতি নং —————” অতএব আগামী ———-ইং তারিখের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর নিকট যোগদান পত্র জমা দিয়ে কাজে যোগদানের অনুরোধ করা হল । নির্ধারিত তারিখের মধ্যে যোগদানে অক্ষম হলে নিয়োগটি বাতিল বলে গণ্য হবে।”
- সমাপ্তি : এই অংশে ” ধন্যবাদান্তে বা শুভেচ্ছা “লেখার পরে আপনার স্বাক্ষর ও তারিখ। তারপর আপনাকে আপনার পদবী, প্রতিষ্ঠানের নাম ও প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা লিখে নিয়োগ পত্রটি লেখা সম্পূর্ণ করবেন।
শেষ কথা :
নিয়োগ পত্র হচ্ছে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র সুতরাং নিয়োগ পত্র লেখার সময় অবশ্যই পেশাদার টোন ব্যবহার করা উচিত। আশা করি এতক্ষন আমরা নিয়োগ পত্র কি,নিয়োগ পত্র লেখার নিয়ম এবং কিভাবে নিয়োগ পত্র লিখবেন সে সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষা, চাকরি এবং ক্যারিয়ার রিলেটেড এমন সব দরকারি পোস্ট নিউজ এবং টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ